![]() |
নাগা সন্ন্যাসীদের জীবন ও তাদের আধ্যাত্মিক সাধনা। |
মাথায় জটা, গায়ে সুতো নেই, তবু শান্তি ও ত্যাগের প্রতীক নাগা সন্ন্যাসীরা। মহাকুম্ভে নাগা সন্ন্যাসীদের দেখা পাওয়া এক বিরল অভিজ্ঞতা। তারা শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক তপস্যা নয়, বরং তাদের জীবনধারা ও ত্যাগের মাধ্যমে সনাতন ধর্মের গভীর ঐতিহ্য তুলে ধরেন।
নাগা সন্ন্যাসীদের উৎপত্তি:
নাগা সন্ন্যাসীদের ইতিহাস বহু শতাব্দী পুরনো। প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, যখন আলেকজান্ডার ভারতে আসেন। নাগা শব্দটির অর্থ পাহাড়ি। তারা মূলত আদি শঙ্করাচার্যের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আখড়াগুলির সঙ্গে যুক্ত হন। শিব, শক্তি, এবং দিগম্বর জৈন দর্শন তাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
কীভাবে নাগা সন্ন্যাসী হওয়া যায়?
নাগা সন্ন্যাসী হতে হলে ছোটবেলা থেকেই শুরু করতে হয়। ব্রহ্মচর্য গ্রহণ, কঠোর তপস্যা, এবং ধর্মপালনের মাধ্যমে এ যাত্রা সম্পূর্ণ হয়।
- ব্রহ্মচর্য: শৈশবে আখড়ায় যোগদান।
- পাঁচ গুরু ও পিণ্ডদান: অতীত জীবনের ত্যাগ ও নতুন জীবনের সূচনা।
- শারীরিক শুদ্ধতা: একদিন উপবাস করে আখড়ার পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
এই সমস্ত ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করার পরই একজন নাগা সন্ন্যাসী হতে পারেন।
নাগা সন্ন্যাসীদের জীবনযাত্রা:
- ভোর ৩টায় উঠে ধ্যান ও যজ্ঞে মনোনিবেশ।
- আশ্রম পরিচ্ছন্ন রাখা ও ধর্মগ্রন্থ পাঠ।
- দিনে একবার সাত্ত্বিক খাবার গ্রহণ।
- শীতল স্থান যেমন হিমালয়ের গুহায় অবস্থান।
পোশাকহীনতার কারণ ও শীত প্রতিরোধ:
নাগা সন্ন্যাসীরা পোশাক ত্যাগ করেন মোহ-মায়া থেকে মুক্তির প্রতীক হিসেবে। তারা বিভূতি মাখেন, যা ঠান্ডা থেকে সুরক্ষা দেয় এবং শারীরিক উষ্ণতা বজায় রাখে।
সারা বছর কোথায় থাকেন তারা?
কুম্ভ মেলা শেষে নাগা সন্ন্যাসীরা তীর্থভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। সাধারণত তারা হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো পাহাড়ি এলাকায় নির্জন গুহায় বাস করেন এবং ধ্যান করেন।
0 মন্তব্যসমূহ