![]() |
শেষ দু’সপ্তাহে জোয়ার রাজ্য বিজেপির সদস্যসংখ্যায়। বনসলের বৈঠকের আগে কি স্বস্তিতে রাজ্য নেতৃত্ব? —Google ছবি |
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তাদের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধিতে নজির সৃষ্টি করেছে। ডিসেম্বর মাসে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ধমকের পর, হঠাৎ করেই মাত্র দু'সপ্তাহে সদস্যসংখ্যা ২৬ লাখ থেকে ৪২ লাখে পৌঁছেছে। এই দ্রুত বৃদ্ধি রাজ্য বিজেপির ইতিহাসে রেকর্ড বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে এর পেছনের কারণ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
সদস্যসংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্য ও পরিস্থিতি
বিজেপির সদস্যসংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। রাজ্যের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি সদস্য। কিন্তু ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সদস্যসংখ্যা ছিল মাত্র ২৬ লাখ ৬২ হাজার, যা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অসন্তোষের কারণ হয়।
শেষ দুই সপ্তাহে সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ
শেষ দুই সপ্তাহে কী এমন ঘটল যা এই অভাবনীয় বৃদ্ধির কারণ হলো? বিজেপি সূত্রের দাবি ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উঠে আসছে কয়েকটি মূল কারণ:
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চাপ ও কৌশলগত পরিবর্তন
ডিসেম্বরের হতাশাজনক অবস্থার পর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে নতুন কৌশল প্রয়োগের নির্দেশ দেয়। এর ফলে স্থানীয় স্তরের কর্মীদের সক্রিয়তা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।দৈনিক সদস্যসংগ্রহে বৃদ্ধি
বিজেপির দাবি অনুযায়ী, শেষ এক সপ্তাহ ধরে দৈনিক ১ লাখেরও বেশি নতুন সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় গড়ে প্রায় ৪ হাজার সদস্য যোগ হয়েছে।সক্রিয় ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া
সদস্যসংগ্রহের পাশাপাশি নতুন সদস্যদের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। ৩৮ লাখেরও বেশি সদস্য ‘ভেরিফায়েড’ সদস্য হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছেন, যেটি একটি রেকর্ড।ডিজিটাল প্রচারণা ও মিসড কল পদ্ধতি
সদস্যসংগ্রহে ডিজিটাল মাধ্যম এবং মোবাইল মিসড কল পদ্ধতির ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। নতুন সদস্যদের তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষণ করে সঠিকভাবে যাচাই করা হয়েছে।সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৌঁছানো
বিজেপি বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। স্থানীয় স্তরে সামাজিক, পেশাগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও প্রশ্ন
তবে এই দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
- এত অল্প সময়ে এত বিশাল সংখ্যক সদস্যসংখ্যা কীভাবে বাস্তবে সম্ভব হলো?
- সদস্যসংগ্রহের পরিসংখ্যান কি সত্যিই টেকসই হবে?
- সংগঠনের এই সংখ্যা ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে?
বিজেপির পরবর্তী লক্ষ্য
বিজেপি সূত্রের খবর, ৪২ লাখ সদস্যসংখ্যা নতুন দিশা দেখাচ্ছে। তবে তাদের ১ কোটি সদস্যের লক্ষ্যমাত্রা এখনও অনেক দূরে। রাজ্য বিজেপি আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
রাজ্য বিজেপির এই সদস্যসংগ্রহ অভিযান তাদের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধির এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। যদিও এই সংখ্যা বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ এবং এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়, তবে এর মাধ্যমে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে তাদের উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করার পথে এগোচ্ছে।
কীভাবে রাজনীতি এবং সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে, তা দেখতে সময়ই বলবে।
0 মন্তব্যসমূহ