![]() |
সাংবাদিক বৈঠকে ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: প্রথম আলো |
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি কী?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা মুজিববাদী সংবিধানকে ফ্যাসিবাদের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাদের দাবি:
- ১৯৭২ সালের মুজিববাদী সংবিধানকে বাতিল বা কবরস্থ ঘোষণা করতে হবে।
- আওয়ামি লিগকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো থেকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করতে হবে।
- জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী সমাজ গঠনের রূপরেখা দিতে হবে।
ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেন, “৬ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা জনসংযোগ চালাবো, জনগণের প্রত্যাশা জানাবো। কিন্তু সরকার যদি ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র প্রকাশে ব্যর্থ হয়, আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”
ইউনুস সরকারের প্রতিক্রিয়া
আজ রবিবার ইউনুস সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এটি প্রকাশ করা যাবে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পটভূমি
গত ৩০ ডিসেম্বর ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন, “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। জনগণের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধান এবং আওয়ামি লিগের রাজনৈতিক আধিপত্যের অবসান ঘটবে।”
তবে ইউনুস সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ছাত্রদের দাবি সরকারের কোনো নীতিগত অবস্থানের অংশ নয়।
রাজনৈতিক সংকটের সম্ভাবনা
বিশ্লেষকদের মতে, ঘোষণাপত্র প্রকাশে সরকারের দেরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ইউনুস সরকারের দ্বন্দ্বকে বাড়িয়ে তুলছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর এই আন্দোলনই ইউনুস সরকারকে ক্ষমতায় বসতে সাহায্য করেছিল। এখন এই মতবিরোধ দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়াতে পারে।
আন্তর্জাতিক নজর: ভারতের কৌশলগত গুরুত্ব
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি ভারত বিশেষ নজর রাখছে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেন এই সংকট গুরুত্বপূর্ণ?
- বাংলাদেশের সংবিধান: ১৯৭২ সালের সংবিধান এবং এর আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্র আন্দোলন।
- রাজনৈতিক উত্তেজনা: ক্ষমতাসীন ইউনুস সরকারের জন্য এই সংকট একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- আঞ্চলিক প্রভাব: বাংলাদেশের পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ
এখন প্রশ্ন হলো, ইউনুস সরকার সময়মতো ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দাবি মেটাবে নাকি রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও গভীর হবে। ১৫ জানুয়ারির ডেডলাইন পার হওয়া পর্যন্ত এই উত্তেজনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাট আলোচনার বিষয় হয়ে থাকবে।
ট্রেন্ডিং কিওয়ার্ডস:
বাংলাদেশ, জুলাই বিপ্লব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মুজিববাদী সংবিধান, ইউনুস সরকার, আওয়ামি লিগ, রাজনৈতিক সংকট, দক্ষিণ এশিয়া রাজনীতি।
0 মন্তব্যসমূহ